Ad Code

.
.
1 / 8
2 / 8
3 / 8
4 / 8
5 / 8
6 / 8
7 / 8
8 / 8

"বিশ্ববিশ্রুত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ" (দ্বিতীয় পর্ব )~ ড. সঞ্জীব রায়


সিনেমার প্রতি ভালোবাসা বা আগ্রহ থাকলেও সত্যজিৎ বাবু প্রথম জীবনে ভাবেননি যে তিনি চলচ্চিত্রকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেন। অনেক ক্ষেত্রেই যোগাযোগ মানুষকে ভবিষ্যৎ পথ দেখায়। এ ক্ষেত্রেও তাই হলো। পৃথিবী বিখ্যাত ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ বনোয়ারের সাথে তাঁর কলকাতায় আলাপ হয়। কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভালে সত্যজিৎ বাবুর সুযোগ হয় ওনার নির্মিত কয়েকটা বই দেখার। বলাবাহুল্য সেগুলি নিঃসন্দেহে সত্যজিৎ বাবুকে দারুন ভাবে আকৃষ্ট করে। কিছুদিন পরে লন্ডনে ইতালিয়ো নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র "লাদ্রি দি বিচিক্লেও" (বাইসাইকেল চোর) দেখার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি সিনেমা তৈরি করবেন।

            সত্যজিৎবাবু ১৯৫৫ সালে পথের পাঁচালি নিয়ে চলচ্চিত্র অভিনয়ে প্রবেশ করেন। কাজের জায়গায় তিনি মানিকবাবু বলেই অধিক পরিচিত ছিলেন। পথের পাঁচালির প্রথম প্রদর্শন হয় নিউইয়র্কে। তারপরে শুধুই সাফল্যের খতিয়ান। মোট ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পায় পথের পাঁচালি। তার মধ্যে ১৯৫৬ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে "শ্রেষ্ঠ মানব দলিল" (হিউম্যান ডকুমেন্ট্রি)। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে যে পথের পাঁচালির এই বিপুল সাফল্যের কারণ কি। সত্যি কথা বলতে কি, প্রশ্নটা করা যত সহজ উত্তরটা মোটেই এক কথায় বলা সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলা যায় যে পথের পাঁচালি নির্মিত হবার আগে সিনেমা বলতে আমরা বুঝতাম শুধুমাত্র বিনোদন ও বাণিজ্য। এই সিনেমা সৃষ্টি সত্যজিৎবাবুর হাত ধরে বাংলা সিনেমায় নিঃসন্দেহে এক মাইলস্টোন। বইটি পড়লে মনে হবে যন্ত্রসঙ্গীতের উপর অসাধারণ দখল থাকা উপেন্দ্রকিশোরবাবুর এই গল্পে সুর তাল লয়- সবই বাঁধা ছিল। এখানে সত্যজিৎবাবুর মুন্সিয়ানা অনেকটাই নামি গায়কদের মতন। তাঁরা যেমন ক্ষেত্রবিশেষে শুদ্ধ 'নি' কে কোমল 'নি' বা গমকের কাজ একটু কম বেশি করে সুরকারের সৃষ্টিকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলেন, তিনিও তাই করেছেন। সঙ্গে অবশ্যই ছিল সঠিক কলাকুশলী ও গায়ক নির্বাচন। ১৯১৫ সালে উপেন্দ্রকিশোর মাত্র ৫২ বছর বয়সে চলে গেলেন। সুকুমার বাবুর বয়স তখন ২৮ বছর। সন্দেশের দায়িত্ব এসে পড়ে সুকুমারবাবুর উপর। এই প্রসঙ্গে উপেন্দ্রকিশোর ও সুকুমারবাবু- এই দুজনের তফাতটা একটু চোখে পড়ে। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সন্দেশে লেখাগুলি ছিল মৌলিক ও প্রাণরসে ভরপুর। কিন্তু তার সংখ্যা ছিল বাস্তবিকই কম। এই বিষয়ে সুকুমার রায় ছিলেন একেবারেই স্বতন্ত্র। তাঁর সমস্ত রচনাই ছিল মৌলিক, তার মধ্যে রস ভর্তি হয়ে ছলকে ছলকে পড়তো। এই সরসতা আর স্বকীয়তা দিয়েই সুকুমার রায় শিশু সাহিত্যকে সাবালকত্ব দান করেছেন।



            (ক্রমশ..... )


               ~ ড. সঞ্জীব রায়

    © Copyright Protected


        পড়ুন => প্রথম পর্ব



Post a Comment

0 Comments

Close Menu