রাত পোহালেই পালিত হতে চলেছে ভারতের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস। বহু বীর যোদ্ধার রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালের ১৫ই অগাস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছিল। অত্যাচারী ইংরেজদের ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত করে স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়েছিল এই দিনটিতেই। তাই ১৫ই অগাস্ট দেশের প্রতিটি স্থানে রাস্তায়, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, সর্বত্র উড়বে গর্বের তিরঙ্গা।
১৫ই অগাস্ট দিনটির তাৎপর্য বা ইতিহাস সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত হলেও, আমাদের তিরঙ্গা অর্থাৎ জাতীয় পতাকার ইতিহাস ও তিনটি রঙের মাহাত্ম্য সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই। তবে চলুন, ভারতবাসী হিসেবে আজ আমরা জেনে নিই জাতীয় পতাকার তিনটি রঙের তাৎপর্য।
ভারতবর্ষের জাতীয় পতাকা জাতীয় মর্যাদার প্রতীক। ভারতীয় আইন অনুসারে জাতীয় পতাকার ব্যবহার সর্বদা "মর্যাদা, আনুগত্য ও সম্মান" (Dignity, Loyalty and Respect) সহকারে হওয়া উচিত। দিনটা ছিল ১৯৪৭ সালের ২২শে জুলাই। গণপরিষদের একটি অধিবেশনে চব্বিশটি দণ্ডযুক্ত নীল "অশোকচক্র" সহ গেরুয়া, সাদা ও সবুজ আনুভূমিক আয়তকার ত্রিবর্ণরঞ্জিত বর্তমান পতাকার রূপটি ভারত অধিরাজ্যের সরকারি পতাকা হিসেবে গৃহীত হয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৯৪৭ সালের ১৫ই অগাস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করলে এই পতাকাটি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকার মর্যাদা লাভ করে। এই পতাকা তৈরি হয়েছিল খাদি বস্ত্র দিয়ে। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের "স্বরাজ" পতাকার ভিত্তিতে এই পতাকাটির নকশা প্রস্তুত করা হয়েছিল। জাতীয় পতাকার নকশাকার ছিলেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া।
তিনটি রং এর তাৎপর্য :-
১৯৩১ সাল ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। ওই বছর করাচির কংগ্রেসের অধিবেশনে ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকাকে জাতীয় পতাকা হিসেবে অনুমোদন করার জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। তখন এই পতাকার উপরে ছিল গেরুয়া, মাঝে সাদা ও চরকা এবং নীচে সবুজ রঙ। কিন্তু ১৯৪৭-এর ২২শে জুলাই গণপরিষদের একটি অধিবেশনে যখন বর্তমান জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে, তখন শুধু চরকার জায়গায় অশোকের ধর্মচক্র-টি গৃহীত হয় পতাকায়।
১) উপরে থাকে গেরুয়া- যা ত্যাগ ও সাহসিকতার প্রতীক।
২) মাঝে থাকে সাদা- যা সত্য ও শান্তির প্রতীক।
৩) নীচে থাকে সবুজ- যা বিশ্বাসের প্রতীক।
৪) সাদা রঙের মাঝখানে থাকা নীল রঙয়ের "অশোকচক্র" হল ন্যায়, ধর্ম ও প্রগতির প্রতীক।
~ পিনাকী সরকার
© Copyright Protected
0 Comments