বাবা
মন্দিরা মুর্মু
শুকনো নদীর অজস্র বলিরেখা দেখলাম যেদিন
বাবার চোখে মুখে
আমার চোখে তখন শ্রাবণ নেমেছে
ভেঙেছে বাঁধ প্রবল জলোচ্ছ্বাসে
গ্রীষ্মের কড়া রৌদ্রে
সবুজ সজীব বন জঙ্গল একদিন
প্রকৃতির কড়া নিয়মে ধূ-ধূ প্রান্তরে পরিণত
বড়ো বড়ো গাছেরা ভাঙাচোরা
রুগ্ন-শীর্ণ অসহায় দাঁড়িয়ে
যে ছিল সবার মাথার উপর ছায়া হয়ে
আজ তাকে ছায়া দেওয়ার কেউ নেই
কিংবা আমাদের ক্ষমতাই বা কি
তাকে ছায়া দেওয়ার!
সে যে অসীম সাহসী, তেজময়
অন্যের ছায়ায় থাকতে নারাজ
ছাইয়ের ভেতর আজও আগুন বেঁচে থাকে
দিন বদলায় তবুও প্রকৃতির নিয়ম থাকে অটল
দায়িত্ব পালনে ছুটি নেই তাদের
তাই শেষ বেলাতেও বেরিয়ে পড়ে রোজগারের পথে
কাঠফাটা রোদের দুপুরে যখন ঘরে ঘরে নামে ভাতঘুম
তখনও তাদের পা চলে
সজোরে হ্যাঁচকা টান মারে রিক্সার হ্যান্ডেলে
ক্লান্তি কি নেই তাদের !মানা- বারণ পিছে ফেলে
কেবলই ছুটে বেরোয় ঘর ছেড়ে?
কর্তব্য আত্মসম্মানের দাবানল যে জ্বলে বুকে
সে কি নেভে বয়সের সাথে সাথে?
0 Comments