Ad Code

.
.
1 / 8
2 / 8
3 / 8
4 / 8
5 / 8
6 / 8
7 / 8
8 / 8

আত্মবিশ্বাস | কলমে ~ রবীন জাকারিয়া | নীরব আলো


বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকার কারণে প্রায় সময়ই কাচারি বাজার এলাকাতেই থাকতে হয়৷ যুগ যুগ ধরে এই জায়গাটা আমার প্রিয়৷ আগে আড্ডা দিতাম, এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তদারকি করি৷ তবে সব সময় নয়, সপ্তাহের ছুটির দু'দিন৷ যেহেতু আমি চাকরি করি তাই প্রতিনিয়ত থাকা হয় না৷ 
        ক'দিন ধরে একটা বিষয় আমার চোখে পড়ছে৷ একজন যুবা নারী প্রতিদিন রাত ঠিক ৮.০০ থেকে ৮.৩০টার সময় ব্যাটারী চালিত রিক্সা ভ্যানে মুনসিপাড়ার দিকে যায়৷ চালকের পাশের সীটে গাদাগাদি করে বসে থাকে, অথচ পুরো ভ্যানটা ফাঁকা৷ এমন দৃশ্য সাধারণত দেখা যায় না৷ তাই আমার কৌতুহল বশে অনেকের কাছে বিষয়টা জানতে চাইলাম৷ বেশিরভাগই জানালো "দূর মশাই জানার আর কিছু পান না৷ তাই ঐ ফালতু মেয়েটা সম্পর্কে আগ্রহ বেশী, তাই না!" উত্তর শুনে অবাক হলাম৷ কোন কিছু না জেনেই কি সহজেই আমরা একজনের চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করি৷ এটা আমাদের জাতীয় চরিত্র- Traditional mind set-up। তাই অবাক হলেও রাগ করলাম না৷ তবে সিদ্ধান্ত নিলাম এর রহস্য উদঘাটন করবো৷ এরপর প্রায় দুই-তিন দিন আমি ওনাকে পর্যবেক্ষণ করলাম৷ আমি দাঁড়িয়ে থাকি ওনার জন্য, ঠিক সময় মতো উনি ভ্যানে করে চলে যান৷ এ ক'দিনে আমি যেমন ওনাকে লক্ষ্য করেছি, তার চেয়ে বেশি উনি আমাকে ফলো করেছেন৷ কেননা এটা স্বীকার করতেই হবে মেয়েদের অবজারভেশন ছেলেদের চেয়ে অনেক বেশী Perfect হয়৷ কেন জানি ওনাকে আমার খুব চেনা চেনা মনে হয়৷ আমার এক কলিগের স্ত্রীর মতো৷ কিন্ত সমস্যা আমার কলিগের স্ত্রী অনেক ফর্সা আর একটু স্বাস্থ্যবতী ছিলেন৷ কিন্ত ইনি বিপরীত৷
        এভাবেই চলছিল, অনেকটা লুকোচুরি৷ যেহেতু আমি চাকরি করি, বিবাহিত- কলেজ পড়ুয়া কোনো যুবা নই, তাই একটা অপরাধবোধ কাজ করছে- যদি ভদ্রমহিলা বিষয়টাকে অন্যভাবে নেন৷ ছি!! লজ্জার ব্যাপার হবে৷ ভাবলাম থাক বাবা৷ কে কী করে সেটা আমার না জানলেও চলবে৷ তাই ছেড়ে দিলাম৷
        পরের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার যথারীতি দিনাজপুর অর্থাৎ আমার কর্মস্থল থেকে বাড়ি আসছি৷ আমার বাড়ি যেহেতু মুনসীপাড়ায়, তাই মেডিকেল মোড় থেকে অটোতে করে আমাকে কাচারি আসতে হয়৷ ব্যাকপ্যাক আর হাতে ল্যাপটপের ব্যাগ নিয়ে অপেক্ষা করছি রিক্সার জন্য৷ কিন্ত রিক্সা পাচ্ছি না৷ এখন এই একটা জ্বালা- সহজে রিক্সা পাওয়া যায় না৷ দু-একটা পাওয়া গেলেও একাধিক ব্যক্তির ডাক৷ এরপরেও যদি ফাঁকা কাউকে পান তাহলে ওরাই বরং বলবে "কোথায় যাবেন?" আপনি যদি বলেন উত্তরে ও বলবে দক্ষিণে৷ আবার আপনি যদি বলেন পূর্বে ও বলবে পশ্চিমে৷ মেজাজটা বিগড়ে আছে৷ তবুও অপেক্ষা করছি৷
        এমন সময় কেউ আমাকে ডাকলো, "জামান ভাই এদিকে..!" "বাইগুন ব্যাঁচা" মুখটা ঘুরিয়ে পিছনে তাকালাম৷ আমি তো অবাক৷ বিস্মিত! ভ্যানে যাতায়াত করা, প্রতিদিন রাত করে ফেরা সেই "ফালতু" মহিলা আমাকে ডাকছে৷ আমার নাম জানলো কী করে? মাথা আউলায় যাচ্ছে৷ 
অভিব্যক্তি স্বাভাবিক রেখে ওনার কাছে গেলাম৷ বললাম "বলুন কী বলবেন৷"
-- ভ্যানে উঠুন৷
-- কেন?
-- "আগে উঠুন, তারপর বলছি৷" বলে উনি ভ্যানের পিছনে বসলেন৷ "কই আসুন৷"
সুবোধ বালকের মতো নয় বরং সম্মোহিত হয়ে তার কথা রাখলাম৷
উনি ঈশারায় চালককে ভ্যান চালাতে বললেন৷
আমি দোয়া দরুদ পড়ছি৷ এ খবর যদি আমার স্ত্রী জানতে পারে তাহলে তিলেতিলে গড়া এত বছরের সংসারটা নষ্ট হয়ে যাবে৷ আল্লাহ্ তুমি উত্তম হিফাজতকারী৷
-- কী ভাবছেন?
-- কই? কিছু না তো!
-- আপনি তো ভয়ে কাঁপছেন!
-- নাহ্৷ কাঁপার কী আছে? আমি কি মেয়ে না কি!
হাহাহা করে উনি হাসলেন৷ তারপর বললেন, "আমাকে এখনো চিনতে পারেননি, তাই না?"
-- কেন চিনবো না? আপনি প্রতিদিন এ পথে যাতায়াত করেন৷
-- ঐ চেনা নয় ভাই৷ আমি হচ্ছি পলি৷ এবার বুঝেছেন?
-- হ্যাঁ বুঝলাম!
-- কী বুঝলেন?
-- আপনি পলি৷
-- আপনি আসলে এখনো বুদ্ধুই রয়ে গেলেন৷ আচ্ছা আপনি এই মাথা নিয়ে কী করে এত বড় চাকরি করেন? 
-- শুনুন আমার মেধা আর চাকরি নিয়ে বাজে কথা বলবেন না৷ আপনি পলি হোন কিংবা ট্রলি, তাতে আমার কিছু যায় আসে না৷ 
        প্রচন্ড অপমানিত বোধ করলাম৷ রেগে চালককে ভ্যান থামাতে বললাম৷ নেমে পড়বো এমন সময় আচমকা পলি আমার হাতটা জড়িয়ে ধরলো৷ কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো, "জামান ভাই, আমি আপনার পলি ভাবি৷ আপনার বন্ধু ও সাবেক কলিগ মতলুবের স্ত্রী৷"
আমি থমকে গেলাম৷ আবেগাপ্লুত হয়ে বললাম, "মতলুব এখন কেমন আছে?"
অনেকক্ষণ ভাবি কথা বললো না৷ চুপ থাকলো৷ তারপর বললো "আগের মতই৷ একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী যেমন থাকে৷"
কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলে নিল৷ বাসাতে নিয়ে যেতে জোর করলো৷
        "আরেকদিন যাবো" বলে আমি নেমে পড়লাম৷ এখন সন্তানদের সাথে দেখা করার চেয়ে কোন কিছুই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ বার বার কল করছে 'বাবা তুমি এখন কোথায়? আর কতক্ষণ লাগবে?" যেন Live telecast। বাড়ির গেটটার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে৷ দূর থেকে দেখে ওরা যখন দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে তখন নিজেকে রাজাধিরাজ মনে হয়৷ কোন সংলাপ ছাড়াই যেন সব অনুভূতি শরীর থেকে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যূতের মতো৷ আহ্! কী শান্তি! 
        পরের দিন আমি মতলুবের বাসায় গেলাম ওর সাথে দেখা করতে৷ বাড়ির দরজায় নক করলাম৷ একটি কিশোরী বের হলো৷ আপাদমস্তক দেখে বললো "কাকে চাই?"
এত সুন্দর আর কম বয়সি মেয়ের কন্ঠ এতো কর্কশ এবং অভদ্র হয়! মেলাতে পারছি না৷ বড্ড অপমানিত বোধ করছি৷ শুধু বললাম "এটা পলি ভাবিদের বাসা না? ওরা তো এখানেই থাকতো৷"
-- "নাহ্! এখানে আমরা থাকি৷" তারপর ঈশারা করে বললো "ওরা এখন ঐ বাসাতে থাকে৷" বলেই দরজা লাগিয়ে দিল৷
আমি একটু হেঁটে মতলুবদের বাড়ির সামনে এসে ডাক দিলাম৷ মতলুব ভাই বাড়িতে আছেন৷ আবেগের বশে কলিং বেল বাজানোর কথা ভুলেই গেলাম৷ কিছুক্ষণের মধ্যে দরজা খুলে আমাকে দেখেই পলি ভাবি চিৎকার করে বলতে লাগলো "এই দেখো কে এসেছে৷ তোমার বন্ধু জামান ভাই৷"
        ভেতরে ঢুকে অবাক হলাম৷ আগে যে বাড়িতে থাকতো এটা তার চেয়ে বড় এবং আধুনিক৷ যে ধারণাটা করছিলাম বাস্তবে আসলে তার উল্টো৷ ভেতরে ঢুকে ড্রয়িং রুমে বসলাম৷ হঠাৎ পেছনে খরাৎ খরাৎ আওয়াজে ঘাড় ঘুরে তাকিয়ে দেখি হুইল চেয়ার ঠেলে মতলুব ভাই ঘরে ঢুকছে৷ ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত আর জীবনযুদ্ধে পরাজিত এক নতজানু সৈনিকের ন্যায় মলিন চেহারা৷ দেখে কষ্ট লাগছে৷ অথচ কি প্রাঞ্জল, সদালাপি আর সাহসী ছেলে ছিলেন মতলুব ভাই৷ আমাদের কলেজে দাপুটে বামপন্থি লিডার ছিলেন৷ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন৷ নিজের জন্য কখনোই কিছু করেননি৷ দিবা-নিশি শিক্ষার্থিদের সেবা করে গেছেন৷ বলা হয় এ পর্যন্ত এই কলেজের ছাত্র সংসদের সবচেয়ে স্বর্ণালী অধ্যায় হলো মতলুব ভাইদের আমল৷ উনি বয়সে আমার সিনিয়র তাই আমি ভাই বলি৷ অন্যদিকে চাকরিতে আমার সাব অর্ডিনেট অর্থাৎ ফাইন্যান্স অফিসার থাকার কারণে তিনি আমাকে ভাই বলেন৷ 
            মতলুব ভাই ঘরে ঢোকা মাত্রই সালাম দিলাম৷ "কেমন আছেন?"
-- স্ত্রীর বোঝা হয়ে আছি!
-- "কক্ষনো নয়৷ তুমি আমার বোঝা নও৷ বরং আমার আত্মবিশ্বাস, অণুপ্রেরণা" হাতে নাস্তার ট্রে নিয়ে ঘরে ঢুকতে ঢুকতেই ভাবী প্রতিবাদ করলো৷ 
        পলি ভাবী চা খাওয়ার ঈশারা করে বলতে লাগলেন, "জামান ভাই ওকে বোঝান তো, আজকে আমি যে ব্যবসাটা দাঁড় করিয়েছি সেটার পুরো কৃতিত্ব ওর৷ ব্যবসার আইডিয়া, ICT, কিংবা Online devery বিষয়ে আমার মত একজন HS পাশ মেয়ের জন্য অসম্ভব ছিল৷ ওই Thime tank. তাছাড়া চাকরি হারানোর পর অন্যের বোঝা হয়ে তো ও বসে থাকেনি৷ বাড়ির সামনের রাস্তায় ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ সেন্টার দেয়৷ সেটা দিয়েই কষ্ট করে সংসারটা চালিয়েছে৷ পাশাপাশি ল্যাপটপে ইউটিউবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা'র বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে আমাদের উপযোগী সামর্থ্য অনুযায়ী একটা ব্যবসার আইডিয়া দাঁড় করিয়েছে৷ সেই মতো ফেজবুকে একটি পেজ তৈরি করে নাম দেয় "Poly's Fashion"। প্রথম পর্যায়ে শহরের বড় বড় দোকান থেকে বিভিন্ন পোষাক কমিশন ভিত্তিক বিক্রি করা শুরু করি৷ মতলুব ড্রেসগুলোর বিভিন্ন এঙ্গেলের আকর্ষণীয় ছবি পেজে পোস্ট করতে থাকে৷ দামটাও লেখা থাকে৷ অল্প সময়ের ভেতর যথেষ্ট অর্ডার পাওয়া শুরু হলো৷ তখন ঢাকা থেকে মাল কিনতে লাগলাম৷ লাভও ভাল হতে থাকলো৷"
আমি বললাম "এখানে তো বেশ কয়েকটা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের গ্রুপ আছে৷ তাদের সাথে যোগাযোগা করেননি!"
-- করেছিলাম৷ ওরা পর্যটনে বেশ ক'বার উদ্যোক্তা মেলার আয়োজন করেছিল৷ আমি স্টল দিয়েছিলাম৷ মন্ত্রী-আমলা উপস্থিত হলেন৷ প্রশংসা করলেন৷ আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেন৷ আমরা বেজায় খুশি৷
-- তারপর?
-- পরের অধ্যায় প্রতারণায় ভরপুর৷ এই সমস্ত গ্রুপ আমাদেরকে দেখিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধিতে ব্যস্ত৷ এ শহরের একটা বড়         উদ্যোক্তা গ্রুপের পরিচালক হচ্ছেন একজন ডাক্তারের স্ত্রী৷ যাঁর নিজেদের দু'টি দশতলা বাড়ি এবং পরিবহন ব্যবসা আছে৷ নেই শুধু নিজের কোন উদ্যোগ৷ এদের উদ্যোগ হলো আমাদেরকে দেখিয়ে সরকারি আর্থিক মুনাফা লুন্ঠনের মহা পরিকল্পনা৷ আর একটি গ্রুপ সত্যিকারের উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে সেরা উদ্যোক্তার এওয়ার্ড দিল নিজের স্ত্রীকে৷ ওনার স্ত্রীর নাকি একটা প্রতিষ্ঠান আছে, যার নাম "খোলা রান্না"৷ ঘেন্না লাগলো৷ তাই এদেরকে লাথি মেরে একাই চেষ্টা চালাতে থাকলাম৷ কেননা আমি জানি মতলুব কতটা সৃজনশীল আর পরিশ্রমী৷
        এরপর একদিন মতলুব বললো শুধু একটা উইংসের উপর নির্ভর না করে বহুমাত্রিক চিন্তা করতে হবে৷ যেন সব কিছু সহজেই কাস্টমারের কাছে পৌঁছানো যায়৷ বাড়ির রান্না খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় সদাই এমনকি গরুর ভূরি, সিঁদল, ইলিশের ডিম সব কিছু৷ তাই ব্যবসার নাম Poly's Fashion থেকে হলো Poly's World. আমাদের ভাগ্য ভালো ছিল, করোনার ভয়াবহতায় লোকজন বাড়ি থেকে না বেরিয়ে বরং আমাদেরকে অর্ডার দিতে থাকলো৷ আমরা এই সময়টাকে পুরোদমে কাজে লাগালাম৷ একটি চার্জার ভ্যান কিনলাম৷ মাসিক বেতন দিয়ে একজন চালক নিয়োগ দিলাম৷ ব্যাস! বদলাতে লাগলো জীবন৷ জীবনের নতুন সংজ্ঞা পেলাম৷
শুধুমাত্র প্রাঞ্জল সেই মতলুবকে আজ আর পাচ্ছি না৷"
        এতটুকু বলেই পলি কাঁদতে থাকলো আর বলতে থাকলো, "জামান ভাই ওকে বোঝান তো আমরা কিছুই হারাইনি৷ ও আমার Inspiration। আমি ওকে ভালবাসি৷"
মতলুব ভাই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে! আমি ওনার কষ্ট বুঝতে পারি৷ সারাজীবন মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ এই মানুষটাকে কেউ মনে রাখেনি৷ সবচেয়ে বড় বেদনার ঘটনাটা হলো যে NGOর জন্য আজ সে প্রতিবন্ধী তারাও তার সঠিক মূল্যায়ন করেনি বরং অপদস্থ করেছে৷
        অফিসের বিশেষ মিটিংয়ে উপস্থিত হতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মতলুব ভাই একটি পা হারান৷ অথচ অফিস থেকে চিকিৎসার খরচ তো দূরে থাক চাকরী থেকে ছাঁটাই করলো৷ শুধু তাই নয় মোটর সাইকেল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে বেতন থেকে সেটাও কেটে নিল৷ হায় রে NGO, মুখে কত মানবাধিকারের কথা বলে, অথচ এরা রক্তচোষার দল৷ আসলে সত্যি হলো এই NGO টি কোন মহৎ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হয়নি বরং নতুন এক বুর্জোয়া দল তৈরি হয়েছে৷ আফশোস যে এদেরকে প্রতিহত করবার বা জবাবদিহি করবার কেউ নেই৷
        চা-নাস্তা প্রায় শেষ৷ এমন সময় পলি ভাবি বললো, "জামান ভাই আপনি থাকুন, ওর সাথে গল্প করুন৷ আমি মালগুলো ডেলিভারি দিয়ে আসি৷ তারপর একসঙ্গে রাতের খাবার খাবো৷ কথা দিলেন তো?"
আমি একটু হেসে বললাম, "আজ নয়, আরেকদিন৷" বলে উঠে দাঁড়ালাম৷ মতলুব ভাইয়ের মনটা খারাপ৷ কাঁধে হাতে রেখে বললাম, "You did a great job"।
        এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো তার ঠোঁটে৷ সারাটা ঘর যেন আলোকিত হয়ে উঠলো ঐটুকু হাসিতে৷ বেশ একটা ভাল লাগা অনুভূতি নিয়ে আমি বেরিয়ে এলাম রাস্তায়৷ দেখলাম থরে থরে মাল সাজানো। ভ্যানের চালকের পাশে বসে এক আত্মবিশ্বাসী নারী দিন বদলের দীপ্ত প্রত্যয়ে দিগন্তরেখা বরাবর ছুটে যাচ্ছে৷ মনের অজান্তেই ওকে একটা স্যালুট দিলাম৷ আর ধীর পায়ে হাঁটতে হাঁটতে বিড়বিড় করে বলতে থাকি, "পলি তোমরাই এদেশের অনুর্বর মাটিতে পলি মাটির প্রলেপে বদলে দেবে বন্ধ্যাত্ব আর Traditional mind set up। জন্ম নেবে এক নতুন প্রজন্ম৷ যাদের হাতের জাদুর কাঠিতে নির্মিত হবে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ৷"

          ~ রবীন জাকারিয়া

© Copyright Protected

Post a Comment

2 Comments

  1. অসংখ্য ভালবাসা আর শুভ কামনা

    ReplyDelete
  2. নারী দিবসে সকল নারীদের স্যালুট৷ কেননা ওঁদের গর্ভেই হয়তো গর্বভরা জন্ম হয়েছিল একদিন

    ReplyDelete
Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)

Close Menu