বাবা
অদৃষ্ট, অগ্নিদেবের শয্যায়
ঠিক এইসময়ে,.. নাঃ, ঠিক এইসময়ে নয়। বলা ভালো সবসময় পূরণ করে করে এই এখনে চলে আসা সময়ে হৃদয়ের চারটা প্রকোষ্ঠে চারখানা ছবি ভাসছে...
প্রথম ছবিতে, একজন বছর ত্রিশ-পঁয়ত্রিশের মানুষের কোলে তার বড়ো আদরের একরত্তি মিষ্টি এক মেয়ে। কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে তিনি।
দ্বিতীয় ছবিতে, ভাসা ভাসা বায়োস্কোপে বছর বত্রিশের আরেকজন মানুষের হাতের আঙুলে প্রায় খামচে ধরা কচি-কচি পুরো পাঁচ-আঙুল। একসাথে হেঁটে যাচ্ছে।
তৃতীয় ছবিতে, সদ্য ঘুম ভাঙার পর... হঠাৎই দুঃস্বপ্ন দেখে হাহাকার করে ওঠা কোনো এক বছর তেইশের গৃহবধূ, এক মায়ের, এক মেয়ের পিতৃশোকের সংবাদ!
চতূর্থ ছবিতে, হাতে চাকরীর জয়েনিং লেটার, গলায় সারাজীবনের যত বাস্প হওয়া যায় তার থেকেও বেশি মেঘ, চোখে প্রচুর না-পাওয়া কষ্টের’ দৃষ্টিতে বছর পঁচিশের এক যুবকের তার বাবাকে বুকে জড়িয়ে ধরা...
...কী, এরকম চারখানা ছবিই কী সবটা বলে দেয়?? না, বলা শেষ হয় না। হ্যাঁ, কখনই শেষ হয় না। পৃথিবীর সভ্যতায়, প্রতিটা শিশুর জন্মদানের সময় থেকে, ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরের থেকে, আজন্মকাল অবধি... এরকম চলতে থাকা আবহমান জীবন-ছবি জুড়ে থাকা সবটা নিয়েই আমাদের সো-কলড #পিতৃ_দিবস।
প্রতিটা নারীর জন্য, প্রতিটা মেয়ের জন্য... ওইযে মানুষটা, আর মানুষটার কোলে ছোট্টো আদুরে একরত্তি মিষ্টি মেয়েটা... সেই মেয়েটা ওই মানুষটার কাছে আরেক মা’-সমান। ওই মানুষটা সারাজীবনের পূণ্য দিয়ে সেই একরত্তি মেয়েটাকে মানুষ করে তুলেছে, এখনও সেভাবেই...! মানুষটা যেমন খুব করে চায় ; তার মিষ্টি মেয়েটা মানুষের মতন মানুষ হোক, তেমনি মেয়েটাও অনেকটা বড়ো হয়ে উঠছে যে। এবারে সেও-ও জীবনে অনেক বড়ো হতে চায়। মানুষটার চাওয়াকে পূরণ করবেই মেয়েটা, কি... পূরণ করবেনা...??!!
... মানুষের মতন মানুষ যে হয়ে উঠতেই হবে। পৃথিবীর প্রতিটা বাবা’র মেয়ে’দের যে মানুষ হয়ে উঠতেই হবে।
এদিকে প্রতিটা পুরুষের জন্য, প্রতিটা ছেলের জন্য... সেই যে হন-হন করে হেঁটে চলা মানুষটার পায়ের ছাপে ছাপে ছোট্টো ছোট্টো পা ফেলে এগিলে চলা, প্রায় দৌড়োতে থাকা ছোট্টো ছেলেটা হাঁপিয়ে যায়..., ভিড়ে হারিয়ে যাবে বলে, ভয় পেয়ে হাতের সব অসাড় ভাব ভুলে জাপটে ধরে থাকে বাবা’র হাতের আঙুল..., এটা-সেটা’র বায়নায় নাজেহাল করে রাখা ছেলেবেলাটা, দস্যিপনার খেসারত দিতে থাকা ক্লান্ত মানুষটা যে-মুহুর্তে হাঁপিয়ে যেতে থাকে..., তখন ছোটো ছেলেটাও একসময় বড়ো হয়ে যায়। বাবা‘ ওইরকমই হন-হন করে হাঁটতে হাঁটতে কখন যেনওও ছেলেকে দৌড়োতে শিখিয়েছে তা ছেলেটা বুঝতেই পারেনি যে এক্কেবারে! তখন ছেলেটাও বড়ো হয়ে যাওয়া বাবা’র সমান উচ্চতায়,বাবা’র সমান কাঁধে, বাবা'র মতো ঘামে ভেজা শার্টে বাড়ি ফিরে বা হয়ত বাবা’র মতো মানুষ হয়ে ওঠার জীবনে পরিশ্রমের শেষে সফল হয়ে ওঠে... আর সারাজীবনে একবার হলেও গলা জড়িয়ে ধরে...
কিজানি,... তখন ভগবানেরও বোধহয় সার্থকতা ক্ষীণ হয় সেই জীবন’ছবির কাছে!!
আর ঠিক এইসময়ে... ঠিক এইসময়গুলোতে... এই প্রতিটা মুহুর্তে চলতে থাকে... জীবন হতে থাকে প্রতি দিবসে, প্রতি সূর্যোদয়ে আমাদের সুখী পিতৃদিবসে। Happy Father's Day ☺️🙇🏽♂️🙏🏽🥹🫂♥️🙇🏽♂️🤍✨
0 Comments