Ad Code

.
.
1 / 6
2 / 6
3 / 6
4 / 6
5 / 6
6 / 6

দুশ্চিন্তা এবং জ্যোতিষ শাস্ত্র | কুণাল রায় | প্রবন্ধ

দুশ্চিন্তা এবং জ্যোতিষ শাস্ত্র
কুণাল রায়

দুশ্চিন্তা বা অবসাদ একটি অতি সাধারণ সমস্যা। বর্তমান সময় অধিকাংশ মানুষেরা এই রোগে আক্রান্ত। সময়, লিঙ্গ ও প্রজাতির ওপর নির্ভর করে এই রোগের ব্যাপ্তি। নানা সমস্যা যেমন চিন্তা, ভয় বা অস্বস্তি, এই অসুখের প্রধান লক্ষণ। মূলত আগামীদিনের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই অসুখের প্রাদুর্ভাব। যদিও আরো বিভিন্ন কারণ রয়েছে যেমন পরিবেশ, পরিজন ও জীবন যাত্রার মান, জ্যোতিষ শাস্ত্র বিশ্বাস করে এক সম্পূর্ন নতুন তথ্য এ। গ্রহগত অবস্থান এই মানষিক রোগের অন্যতম কারণ!

    আমাদের জন্ম ছক আমাদের জীবনে এক বিপুল প্রভাব বিস্তার করে। এই জন্ম ছক থেকে বহু কিছু জানা ও বলা সম্ভব। এক কথায় বলা যায় এই জন্ম ছক বা কুণ্ডলী এক প্রতিবিম্বের মত কাজ করে।
    আজকের যে আলোচ্য বিষয়, সেই খানে মূলত তিনটি গ্রহ এই সকল একাকিত্ত, মনকষ্ট বা দুশ্চিন্তায় এক বৃহৎ ভূমিকা পালন করে থাকে। এরা হলেন চন্দ্র, শনি ও বুধ। চন্দ্র আমাদের মনের কারক গ্রহ। শনি হলেন কর্মফলদাতা। এবং বুধ হলেন সকল প্রকার বুদ্ধিমত্তার কারক গ্রহ।
    জন্ম ছকে যদি এই চন্দ্র পীড়িত অবস্থায় থাকে, তাহলে দুশ্চিন্তা ও মনকষ্ট বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা অধিক। চন্দ্র যদি রাহু বা কেতুর দ্বারা আক্রান্ত হয় বা তাঁদের নক্ষত্রে বিরাজ করে, এই পীড়ন অবশ্যম্ভাবী। চন্দ্র মূলত লগ্নের থেকে ষষ্ঠ ,অষ্টম বা দ্বাদশ ঘরে বিরাজ করলে, এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। অন্যদিকে কেমদ্রুম যোগ নির্মিত হলে, জাতক বা জাতিকা সাফল্যের মুখ দেখতে পায় না সহজে, অর্থাৎ চন্দ্রের আগের ও পরের ঘরে কোন গ্রহ থাকা আবশ্যক। চন্দ্র যদি শনির দ্বারা পীড়িত হন, দুর্বল বা নীচস্ত থাকেন, অবসাদ অবশ্যম্ভাবী। 
    শনি হলেন আমাদের এই সৌর মন্ডলের গ্রহরাজ। তিনি কর্মফলদাতা। এক কঠিন শিক্ষকের নেয় উনি আমাদের ফল প্রদান করে থাকেন। কিন্তু গ্রহরাজ কোনো ভাবে অষ্টম ও দ্বাদশ ঘরে বিরাজ করলে, লগ্ন সাপেক্ষে, অকারণ নৈরাশ্য বা অবসাদ দেখা দেয়। শনি যদি মঙ্গলের সাথে থাকে বা দৃষ্টি বিনিময় করে, এই পীড়ন বৃহৎ আকার ধারণ করতে পারে, এমনকি জাতক বা জাতিকা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে! অন্যদিকে শনির সাড়ে সাতির সময়ে এই একাকিত্ত ও বিষণ্ণতা প্রবল রূপে বর্ষিত হতে পারে যদি গ্রহরাজ দুর্বল, দুস্থানগত বা নীচস্ত থাকেন। এই সঞ্চারের দ্বিতীয় চরণে মানসিক উদ্বেগ অতীব বৃদ্ধি পায়, কারণ চন্দ্র ও শনি একত্রিত হয় বিষযোগ নির্মাণ করেন।
    বুধ, গ্রহ যুবরাজ বলেই খ্যাত। গ্রহ যুবরাজ মঙ্গল, কেতু ও চন্দ্রের সাথে থাকলে, সাধারণত অশুভ ফল দান করে থাকে। মঙ্গল ও বুধ একত্রে জাতক কিংবা জাতিকাকে অত্যন্ত রাগী করে তোলে। মঙ্গলের পরাক্রম ও তেজের কাছে বুধের প্রভাবের এক প্রকার স্খলন ঘটে। অন্যদিকে চন্দ্রের সাথে এক মানসিক চাঞ্চল্যভাব নির্মাণ করে। তবে বুধ ও কেতু সর্বাধিক অশুভ ফল প্রদান করে। সাধারণত লগ্নের ষষ্ঠ ও দ্বাদশ স্থান এই সকল যোগ জাতক অথবা জাতিকার জীবনে অশান্তি ডেকে আনে। 
    বলাবাহুল্য কোন গ্রহ শুভ বা অশুভ হয় না। তাঁদের স্থান তাঁদের শুভ বা অশুভ রূপে বিবেচিত করে। যদি কোন গ্রহ স্বাক্ষেত্রে বা তুঙ্গে থাকে, সেই ষষ্ট, অষ্টম বা দ্বাদশ হলেও শুভ ফল পাওয়া সম্ভব। তাই সর্বদিক বিচার্য, উপসংহারে উপনীত হওয়ার পূর্বে। আমাদের জন্ম ছকে বা গোচরে সকল গ্রহ অনুকূল থাকলেও, আমাদের দৈনন্দিন কর্ম যদি শুভ না হয়, শুভ ফল প্রত্যাশা করা এক উপহাস সম। আমাদের কর্মই শেষ কথা বলে। মনে রাখা প্রয়োজন গ্রহ ও নক্ষত্র এক নিরপেক্ষ ফল দান করে, পরিস্থিতি যাই বলুক না কেন!!







Post a Comment

0 Comments

Close Menu