Ad Code

.
.
1 / 8
2 / 8
3 / 8
4 / 8
5 / 8
6 / 8
7 / 8
8 / 8

কামরূপ কামাখ্যা এবং অম্বুবাচী | কুণাল রায়

    
    পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী দক্ষতনয়া সতী তাঁর পতি দেবাদিদেব মহাদেবের নিন্দা সহ্য করতে না পেরে, আপন পিতার গৃহেই দেহত্যাগ করেন। ভগবান শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র সতীর দেহকে মোট ৫১টি খন্ডে খণ্ডিত করে। মায়ের দেহাংশ পৃথিবীর যেই যেই স্থানে নিপতিত হয়, সেই সেই ক্ষেত্রে দেবী দুর্গা বা কালীর মন্দির নির্মিত হয়। আসামে দেবী কামাখ্যার মন্দির এক উজ্জ্বলতম উদাহরণ। কথিত আছে দেবীর গর্ভ ও যোনি দেশ এই স্থানে নিপতিত হয়। 
    প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে, অর্থাৎ বাংলার তৃতীয় মাসে, রবি যখন মিথুন রাশিতে প্রবেশ করে এবং মৃগশিরা নক্ষত্র তাঁর ত্রিপদ সম্পূর্ণ করে চতুর্থ পদে প্রবেশ করে, পৃথিবী ঋতুমতী হন। দেবীও এই সময় ঋতুমতী হন। তাই দেবীর মন্দির সহ বাকি সকল মন্দিরও বন্ধ থাকে। চতুর্থ দিন থেকে সর্ব সাধারণের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু মন্দির বন্ধ থাকলেও, উৎসব তার আপন মেজাজেই পালিত হয় আসামে। তবে এই বছর অতিমারীর কারণে, সকল উৎসব বন্ধ! দেবী তাঁর ভক্তবৃন্দের দর্শন থেকে বঞ্চিত থাকবেন এই সময়! গৃহের দেব দেবীদের আসনও এই সময় স্পর্শ করতে নেই।মূলত এই তিনটি দিন এক কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে অতিবাহিত করতে হয়।
    এই সময় ঋতুমতী নারীরা গর্ভধারণ করতে সক্ষম হন। এই পর্বের পর বসুন্ধরা শস্য শ্যামলা হয় ওঠেন। তবে কৃষকরা কোন প্রকার চাষের কাজ করতে পারেন না। বিধবা মহিলারা এই সময় রন্ধনশালা থেকে বিরত থাকেন। উষ্ণ কোন খাদ্য বা পানীয় সেবন করেন না। অম্বুবাচী আরম্ভ হওয়ার পূর্বে রান্না করা ভোজন এদের গ্রহণ করতে হয়। 
    আধুনিক সমাজে এর তাৎপর্য অনেকটাই ব্যাহত হয়েছে। বাংলার ব্রতকথা সম্পর্কে অজ্ঞাত বা অনভিজ্ঞ! ব্যস্ত জীবনের মাঝে এই সকল নিয়ম, প্রথা, আচার স্মরণে রাখা সম্ভব নয়। তবু কিছু মানুষ মনে রাখেন এবং মানেন এই তিনটি দিন। আমাদের শিল্প ও সংস্কৃতির মাঝে লুকিয়ে আছে বহু অজানা তথ্য ও কাহিনী। তাই এই মাতৃভূমিকে বুঝতে চাইলে, সন্মান করতে চাইলে, চাই একটু সময়, ধৈর্য,কৌতুহল ও এক সংবেদনশীল চেতনা!!

Post a Comment

0 Comments

Close Menu