নজরুলের ছোটো বেলার থেকে কবিতা লেখা শুরু | তিনি যখন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র তখনই তার কবিতা প্রকাশ পায়। নজরুল ফাঁকা সময় পেলেই কবিতা লিখতেন ৷ খাতারমধ্যে ফাকা জায়গা গেলেইলিখে ফেলতেন মনের সব আগোছাল কথা গুছিয়ে কবিতার আকারে । একদিন বন্ধুরা কবির এই গোপন ভালো লাগার বিষয়টি জেনে ফেলে তারা খুব মজা করে কবিতা শুনতে থাকে ৷ কবি ও খুব আনন্দ পান ৷.
সেদিন ক্লাসে বন্ধুরা মজা করেই স্যার কে বলেদিল নজরুলের কবিতা লেখার কথা ৷ নজরুল তো ভয়েই অস্থির। মাস্টারমশাই তো বাঁকা দৃষ্টিতে দেখলেন বললেন হু৷ তারপর আপাদমস্তক দেখতে লাগলেন ৷ নজরুল তো ভয়ে জড় সড় হয়ে এককোণে বসে রইলেন। তারপর মাস্টারমশাই বললেন তা শোনাও তোমার কবিতা কি লিখেছো দেখি ৷
নজরুল তার কচি হাতের কবিতাটি পড়ে মাষ্টারমশাইকে শোনাতে লাগলেন।
(ভোর হোলো দোর খোলো
খুঁকুমনি উঠো রে
ঐ ডাকে যুঁই শাখে ফুল খুঁকি ছোটো রে।
রবি মামা দেয় হামা
গায়ে রাঙা জামা ঐ ই,
দারোয়ান গায় গান শোনো ঐই রামা হোই ৷)
যেটি প্রভাতী কবিতা নামে পরিচিত ৷ আমরা সেই ছোটো বেলায় পড়ে বড় হয়েছি ৷
মাস্টারমশাই তো নির্বাক ক্লাস একেবারে শান্ত ৷ মাস্টারমশাই কি বলবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না ৷ তারপর কবিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন ৷
বললেন তুমি বড় হয়ে একজন বিখ্যাত কবি হবে এই আমি বলে রাখলুম। তাঁর আশির্বাদ সত্যিই হয়ে ছিল তিনি বিখ্যাত কবি হয়েছিলেন ৷ তিনি কবিতা গল্প উপন্যাস গান নাটক সবেই বিখ্যাত হয়েছিলেন নিজের সহজ সরল প্রান খোলা ভাষায় ৷ তাঁর জীবন সংগ্রাম অনেক রোমাঞ্চে ভরা ৷ তিনি যখন জেলে তখন তিনি তরুণ কবি ৷ রবীন্দ্রনাথ তখন নাম করা কবি হিসাবে দেশে বিদেশে সমাদৃত হয়েছিলেন ৷ তিনি নজরুলকে একটি তার লেখা কবিতার বই উপহার দিয়েছিলেন ৷ কবিতো আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলেন ৷ রবীন্দ্রনাথের মনে নজরুল জায়গা করে নিয়েছিলেন ৷
তিনি ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসাবে পরি চিতি পেয়েছিলেন ৷ ২৯ শে আগস্ট ১৯৭৬ সালে এই ধরাধাম ত্যাগ করেছিলেন। তার সৃষ্টি আমাদের সকলের মনে চিরকাল থেকে যাবে ৷ তিনি আমাদের মনের মণিকোঠায় চিরদিন থাকবেন ৷
তার গান কবিতা আমাদের জীবনের এক একটি পটভূমি ৷ শেষ বয়েসে ও ভক্তিসঙ্গিতে মিশে আছে রোমে রোমে ৷
~ দীপান্বিতা পান্ডে
© Copyright Protected
0 Comments