Ad Code

.
.
1 / 8
2 / 8
3 / 8
4 / 8
5 / 8
6 / 8
7 / 8
8 / 8

মাতৃপক্ষ | কলমে ~ অর্ণব মিত্র | নীরব আলো


চিন্ময় আর তমালীর সাড়ে পাঁচ বছর হল বিয়ে হয়েছে। ওদের কোনো সন্তান নেই। ওদের বাড়িতে ৫৬ বছর ধরে দুর্গা পুজো হয়ে আসছে।

মহালয়ার দিন একটা খারাপ খবর আসে। চিন্ময় গঙ্গায় তর্পণ করতে গিয়ে দেখতে পায় একটি মায়ের মৃতদেহের সামনে দু'বছরের বাচ্চা একটা মেয়ে তার মায়ের মৃতদেহকে আগলে ধরে কেঁদে যাচ্ছে।

চিন্ময় কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে মেয়েটাকে বাড়ি নিয়ে আসে। বাড়িতে এসে অশান্তির শেষ থাকে না। একে পুজো বাড়ি নানা কাজ, তার ওপর এই ঝামেলা।

তমালীর শাশুড়ি সাফ জানিয়ে দেয় যে এই মেয়েকে উনি ওনার নাতনি বলে মেনে নিতে পারবেন না।
তমালীর পিসিশাশুড়ি বলেন, " হ্যাঁ রে তমা, এর মা তো জলে ঝাঁপ দিয়ে মরেছে। নিশ্চয়ই কিছু কেলেঙ্কারি আছে। এই মেয়ে কে নিয়ে ঝামেলায় জড়াস নে তো। ওকে হোমে রেখে দিয়ে আয়। দেখ এতকাল তো ধৈর্য্য ধরলি..আরেকটু ধর। এই বংশের ওয়ারিস ঠিক আসবে।"

চিন্ময়ের পিসি এই বংশের প্রথম গ্র্যাজুয়েট। তার মুখে এই সব কথা শুনে তমালি দৃঢ় প্রতিবাদ করে বলল,
- "এক কাজ করুন পিসিমা, এই বাড়ির দুর্গা পুজো বন্ধ করে দিন! কি হবে করে? ওই মাটির মূর্তির সাথে আপনাদের কি কোনো রক্তের সম্পর্ক আছে নাকি। মা দুর্গা আপনাদের বংশের ওয়ারিস? উনি তো আমাদের কাউকে জন্ম দেন নি তাও আমাদের কাছে উনিই সবচেয়ে বড় ভরসা। রক্তের সম্পর্কের বাটখারায় সব মাপা যায়না। পিসিমা! আপনার নিজের রক্ত আপনার ছেলে কেন আপনাকে দেখে না। শুনুন ভালো করে সকলে, যদি আমার মেয়ে উমা এই বাড়িতে না থাকতে পারে তাহলে কোনো পুজোও হবে না এ বাড়িতে। এবার দেখি কার হিম্মত আছে আমার মেয়ে কে আমার কাছ থেকে দূরে সরায়!"
আজ মহালয়া। আজ উমার জন্মদিন। আজ দেবীপক্ষের সাথে মাতৃপক্ষেরও সূচনা।


           ~ অর্ণব মিত্র
© Copyright Protected

Post a Comment

0 Comments

Close Menu