ডক্টর বিধানচন্দ্র রায় এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ডাক্তার ছিলেন। ১লা জুলাই তাঁর জন্মদিন এবং মৃত্যুদিন। সেই কারণেই আজ ১লা জুলাই ওয়ার্ল্ড ডক্টরস ডে।
তখন তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সালটা ১৯৬০ এর কাছাকাছি। আমার তখনো পৃথিবীর বুকে আসা হয়ে ওঠেনি। গল্পটা আমার মাসতুতো জামাইবাবু দ্বিজেন্দ্রনাথ স্যান্যালের কাছ থেকেই শোনা। উনি তখন বিধানচন্দ্র রায়ের সি-এম-ও তে কর্মরত। একজন রোগী বহু প্রচেষ্টা স্বত্বেও কিছুতেই বিধানবাবুর নাগাল পাচ্ছিলেন না। ওনার সমস্যা ছিলো, উনি যা খাচ্ছেন, তা হজম হচ্ছে না, এমন কি জল খেলেও বমি হয়ে যাচ্ছে। দিনদিন শুকিয়ে যাচ্ছেন। ভদ্রলোকের নামটা এই মুহূর্তে আমার মনে নেই। ধরা যাক নামটা উপেন। সচিব স্তরের কাউকে ধরাধরি করে এক সন্ধ্যায় বিধানবাবুর দপ্তরে দেখা করার সুযোগ পেলেন। ভদ্রলোককে একপলক দেখেই বিধানবাবুর তাঁর তীক্ষ্ণ মেধা ও ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দিয়ে বোধকরি বুঝে গেলেন সমস্যাটা। অফিসের পিওনকে বললেন, "যাও গরম গরম সিঙ্গারা আর মিষ্টি নিয়ে এসো।" ভদ্রলোককে বসিয়ে রেখে এটা সেটা কাজ করছেন বিধানবাবু। ভদ্রলোক ক্রমে অস্থির হয়ে উঠছেন। সিঙ্গারা, মিষ্টি চলে এলো। এবার বললেন বিধানবাবু, "অনেক দূর থেকে এসেছেন, ওগুলো খেয়ে নিন।" ভদ্রলোক আর্তনাদ করে বললেন, "খেতেই তো পারছি না ডাক্তারবাবু।"
--"পারবেন- পারবেন" বলে এগিয়ে এসে ভদ্রলোকের মুখটা চেপে ধরে, একটা ছোটো ফরসেপ ভদ্রলোকের নাকে গলিয়ে একটা বড় চুল বার করে আনলেন। তারপর বললেন, " আপনার একটা নাকের চুল বড় হয়ে গিয়ে গলায় ইনফেকটেড করেছে, তাই সমস্যা। এবার আপনি সব খেতে পারবেন।"
ভদ্রলোককে ভরপেট খাইয়ে ছেড়ে ছিলেন। কোনো সমস্যা নেই, কোনো ওষুধ-ও দিলেন না। ভদ্রলোক সজল চোখে বারবার নমস্কার করতে করতে ফিরে গেলেন, "স্যার আপনি সত্যিই ভগবান।"
~ আশীষ কুন্ডু
© Copyright Protected
2 Comments
নতুন জানলাম
ReplyDeleteবেশ মজার ঘটনা, অজানা ছিল। ধন্যবাদ লেখককে।
ReplyDelete