তোমাদের কত সাধনার আদরের ধন,
চাওয়ার আগেই পাওয়া দিয়ে ভুলায়ে
আমারে ভালো রাখার প্রচেষ্টা অনুক্ষণ।
কিন্তু ভাবো কি তোমরা আমারও আছে
স্পর্শকাতর নরম সরম প্রাণোচ্ছ্বল মন!
যা সহজ সাবলীল বাড় বৃদ্ধিতে পুষ্ট হয়ে
স্বাধীন ডানায় ইতিউতি উড়ুক কিছুক্ষণ।
তোমাদের অপূরণীয় সাধ ইচ্ছে মেটাতে
বুঝেও বোঝো নি শৈশবের দুঃসহ জ্বালা!
আমার জিন সাধ্য ক্ষমতার বাইরে গিয়ে
আমায় নিয়ে খেলছ আত্মসুখের খেলা।
তাই তো সুইমিং, পেন্টিং থেকে নাচ-গান
সবেতেই চ্যাম্পিয়ান হওয়াতে উন্মুখ,
মনে করাও সদাই প্রথম হওয়াটি চাই
হারলে পরে কপালে সইতে হবে দুখ।
আর পড়ালেখা! সে কথা আর বলব কি হায়
অসুস্থ প্রতিযোগিতায় তুরুপের তাসটি করে,
তোমাদের অহং ইগো প্রতিপত্তির বাড়বাড়ন্তে
বানাও যন্ত্রমানব, মোর সাধের শৈশব কেড়ে।
লেখাপড়ার ইঁদুর দৌড়ে শেখাচ্ছ তোমরা
হিংসা রেষারেষি স্বার্থপরতা আত্মমগ্নতা,
আর দিনের শেষে শিক্ষার নামে তোমাদের
শুধু নম্বর নম্বর করে মাথাকোটার উন্মত্ততা!
শুধু ছুটতে শেখাও হারতে আমায় শেখাও নি,
সখ্যতা সহযোগিতা সহমর্মিতা সহানুভূতি নয়,
প্রতিযোগিতা প্রতিদ্বন্দীতায় বাঁচতে শেখাও
তাই ছোট্ট এ জীবন ঘিরে অবসাদও রয়।
শিশুর ছোট্ট পিঠে চাপিয়ে মস্ত ভারী বোঝা
তোমাদেরই আবার জাতির মেরুদণ্ড খোঁজা!
শৈশবের দুঃখ ব্যথা কিবা কেউ আর বুঝল কই!
দুচোখের স্বপ্নগুলো ফানুসে ভরে উদাসী রই।
ডাকছে আমায় খোলা মাঠ আর শ্যামবনানী
দেখো ডাকে ফুল ফল আর ভোরের দুষ্টু পাখি,
তবু ফিরল না শৈশবের ঐ সোনাঝরা দিনগুলি!
সীমাহীন চাহিদা অপূর্ণতায় রইল সবই ফাঁকি!!
~ শুভ্রা ভট্টাচার্য
© Copyright Protected
0 Comments