জল সংরক্ষণ
দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে
জল সংরক্ষণজলের অপর নাম জীবন এ কথা কে না জানে। মানুষ ও পৃথিবীর সমগ্র প্রাণী ও উদ্ভিদের বেঁচে থাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রধান উপাদান হলো জল। শুধু তাই নয়, মানব শরীরের একটা বড় অংশ জলীয় উপাদানের গঠিত। ভৌগলিক ব্যাখ্যায় বলা যায় জল একটি ক্ষয়িস্নু সম্পদ।
জলের প্রয়োজনীয়তা ঘুম থেকে ওঠা ও রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত আছে। আর সেই জলকে আমরা কিভাবে অপব্যবহার করছি।
কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় জল নিয়ে একটা খবরে চোখ আটকে গেল। দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী কেপটাউন শহরটিকে নাকি তার সরকার খরা প্রবণ বলে ঘোষণা করেছেন ২০২৩ এর ১৪ই এপ্রিল। সেখানকার সরকার আর জল সরবরাহ করার অক্ষমতার কথা প্রকাশ করেছেন। আজ কেপটাউন কাল আমাদের মতো বহুল জনসংখ্যার দেশেও হতে পারে। আমাদের মনে আছে নিশ্চয়ই। লাতুরে আমরা ট্রেনে করে জল পাঠিয়েছিলাম। পত্রপত্রিকাগুলিতে সেই সময়ে ছবিতে ফুটে উঠেছিল লাতুরের মানুষের জলের জন্য হাহাকারের ছবি। পৃথিবীতে সমগ্র জলের পরিমাণ যদি এক বোতল হয়, তাহলে পানযোগ্য জল পাঁচ চা চামচের মত থাকে। আর সেই জলকে আমরা যথেচ্ছ ভাবে অপচয় করেই যাচ্ছি। আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, যে এই জনবিস্ফোরণের দেশে জলের ব্যবহার প্রচুর, ফলে আরও বেশি করে আমাদের দায়িত্বশীল ও সচেতন হতে হবে যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল খরচ যাতে না হয়। কিছু প্রাথমিক নিয়ম মেনে চললেই আমরা জলকে অনায়াসে বাঁচাতে পারি। যেমন -
১. জল যে ক্ষয়িষ্ণু সম্পদ সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
২.রাস্তার কলের জল সব সময় পড়লে তাতে কলের মুখ লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. বাড়িতে জলের কল সবসময় খুলে রাখবো না।
৪. নিত্য প্রয়োজনীয় কাজকর্মে যে জল ব্যবহৃত হয় তার প্রয়োজনে অতিরিক্ত খরচ করা চলবে না।
৫. বাড়ির ট্যাঙ্ক ভর্তি হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার সুইচ অফ করতে হবে।
৬. বৃষ্টির সময়ে ছাদের জল যাতে ধরে রাখা যায় সেই জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. একই পরিবারের একের অধিক সাব মার্শাল করা চলবে না।
৮. সাব মার্শাল করতে গেলে পৌরসভা বা পঞ্চায়েত থেকে পারমিশন নিয়ে করতে হবে।
৯. সরকারকে এমন আইন আনতে হবে যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল যাতে কেউ খরচ না করতে পারে।
১০. সর্বোপরি বলতে হয় যে আমাদের আরো বেশি বেশি করে গাছ লাগাতে হবে।
তাহলে পরিবেশের অনেক সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পেয়ে যাব এবং আমাদের উত্তরসূরিদের জলের জন্য হাহাকার করতে হবে না।
0 Comments